মহেশখালী ভ্রমণ গাইড

মূল পাতা / দর্শনীয় স্থান / চট্টগ্রাম / কক্সবাজার / মহেশখালী ভ্রমণ গাইড

মহেশখালী ভ্রমণ গাইড

প্রকাশকালঃ October 22, 2020

কৃতজ্ঞতায়ঃ Shantosd

মহেশখালী ভ্রমণ নিয়ে কারো আগ্রহ নেই এমন পর্যটক প্রেমিক খুঁজে পাওয়া খুব দুষ্কর। কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় এটি অবস্থিত। মূলত একটি একটি দ্বীপ। এটি বৌদ্ধ সেন মহেশ্বর বলে এর নাম দেওয়া হয়েছে মহেশখালী দ্বীপ।

জনো মুখে শোনা যায় যে 1559 সালের প্রচন্ড জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণি ঝড়ের কারণে মূল ভূখন্ড থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং এ দ্বীপের সৃষ্টি হয়। ধারণা করা হয় যে বলতো সেন মহেশ্বর এর থেকে প্রায় 200 বছর আগে এ জায়গাটির নামকরণ করা হয়েছিল। যা মহেশখালী নামেও পরিচিত বর্তমানে।

এখানে আরো কয়েকটি সুন্দর ও সৌন্দর্য মনমুগ্ধকর মিল রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে সোনাদিয়া, মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা। এ তিনটি ছোট ছোট দ্বীপ। এলাকায় চিংড়ি, লবণ , শুটকি ও মুক্তা উৎপন্ন দেশজুড়ে সুনাম অর্জন করেছে। কক্সবাজার থেকে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে মহেশখালী দ্বীপে যেতে।

এর পাশে রয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। যদি আপনার হাতে সময়ও বাজেট থাকে তাহলে সেন্টমার্টিন থেকে ঘুরে আসতে পারেন সাথে। সেন্টমার্টিন ভ্রমণ সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

মহেশখালী হচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ। এখানে রয়েছে মৈনাক পর্বত। যার উপরে রয়েছে আদিনাথ মন্দির। দ্বীপটির কারুকার্য এখানে আসা পর্যটকদের মনকে আকৃষ্ট করে তোলে। আর এখানে আদিনাথ মন্দিরে ফাগুন মাসে প্রতিবছর আদিনাথ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে আরো রয়েছে জলাবন, বৌদ্ধ বিহার , নানা প্রজাতির পশুপাখি।

এছাড়া ঝাউ বাগান ও চরপাড়া বিচ থেকে ঘুরে আসতে পারা যায়। আদিনাথ মন্দির ছাড়াও রয়েছে রাখাইন পাড়া ও স্বর্ণমন্দির। এখানে চলতি পথে দেখা যায় পান গাছের বাগান এবং লবণ চাষের মাঠ। যা আপনার কাছে নতুন একটা অভিজ্ঞতা মনে হবে। মহেশখালীর পান এর জনপ্রিয়তা সারা বাংলাদেশ জুড়ে। এখানে আসলে অবশ্যই পান খেয়ে পান এর মজাটা বুঝে যাবেন।

ঢাকা থেকে দূরত্ব

ঢাকা থেকে দুরুত্ব মহেশখালী ভ্রমণ ৩৮৫ কি.মি

যাতায়াত

মহেশখালী ভ্রমণ দুটি পথে করা যায়। একটি হচ্ছে প্রথমে কক্সবাজার যেতে হবে তারপর কক্সবাজার থেকে মহেশখালী যেতে হবে। এ পথ সবচেয়ে সুবিধাজনক। কক্সবাজারে পর্যটকদের জন্য ভালো উপায়।

ঢাকা থেকে কক্সবাজারে আকাশপথ সড়কপথ, এবং রেল পথে যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে কক্সবাজার গামী বাস গুলোর নাম হচ্ছে সৌদিয়া ,এস আলম মার্সিডিজ রেঞ্জ, গ্রীন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ , শ্যামলী পরিবহন , সোহাগ পরিবহন , এস আলম পরিবহন ইত্যাদি ।

আর যদি ঢাকা থেকে ট্রেনে কক্সবাজার যেতে চান তাহলে কমলাপুর রেলস্টেশন কিংবা বিমানবন্দর রেলস্টেশন হতে যাত্রা করতে হবে। ট্রেনগুলো নাম হচ্ছে সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, তূর্ণা নিশিতা, মহানগর প্রভাতী ইত্যাদি।

আকাশপথে ভ্রমন করতে চাইলে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বেশ কয়েকটি ফ্লাইট রয়েছে।

কক্সবাজার জেলা শহর থেকে মহেশখালী যাওয়ার জন্য যেটিতে চলে যেতে হবে। তারপর স্পিডবোট, ট্রলারে করে মহেশখালী যাত্রা শুরু করতে হবে। এর ভাড়া সাধারণত হয় 70 থেকে 80 টাকা পর্যন্ত। কয়েকজন একসাথে থাকেন তাহলে স্পিডবোট রিজার্ভ করে নেয়াই উত্তম।

মহেশখালী আসার পর যদি একা অথবা দু-তিনজন হন তাহলে একটা রিক্সা ভাড়া করে নেওয়া ভালো। এতে করে ঘুরে সবকিছু দেখতে পারবেন। রিকশাভাড়া সাধারণত 150 টাকা থেকে 170 টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

আর যদি 5 থেকে 7 জন হয়ে থাকেন তাহলে ইজি বাইক ভাড়া করা ভালো। এর বারা সাধারণত 300 থেকে 350 টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। তবে দরদাম করে নেওয়াই ভালো। যাতে পরে ভোগান্তিতে না করতে হয়।

দ্বিতীয় রাস্তা হচ্ছে চট্টগ্রাম শহর থেকে সড়কপথে চকরিয়া এসে বদরখালী দিয়ে মহেশখালী যেতে হবে। এ রাস্তায় মহেশখালী যেতে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগে।

যানবাহনের সময়সূচি

ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য গাড়িগুলো নাম হচ্ছে-

শ্যামলী পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, এস আলম, শাহ বাহাদুর, সৌদিয়া, গ্রীন লাইন, হানিফ, মডার্ন লাইন।  এ বাস গুলো সাধারণত রাত 8 টা থেকে 10 টার মধ্যে ঢাকা হতে কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

ট্রেন গুলোর নাম হচ্ছে- তূর্ণা নিশীথা, সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, মহানগর এবং চট্টগ্রাম মেইল।

বিমান ফ্লাইট গুলোর নাম হচ্ছে- বাংলাদেশ বিমান, নভোএয়ার , ইউএস-বাংলা ইত্যাদি।

বিশেষ খাবার

কক্সবাজার মহেশখালী থেকে অল্প সময়ে ফিরে যাওয়া যায়। এর জন্য তেমন খাবারের প্রয়োজন হয় না। তবে সাময়িক ক্ষুধা নিবারণের জন্য হালকা খাবার খেতে পারেন। বাজারে সব ধরনের হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট রয়েছে। কম মিডিয়াম এবং বেশি বাজেটের রয়েছে এগুলো। সিজন অনুসারে খাবারের দাম কম বেশি হতে পারে।

 

হোটেল গুলোতে ভাত মাছ, ভাত মাংস যেকোনো ধরনের খাবার পাওয়া যায়। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছের ফ্রাই গুলো খুব মজা হয়ে থাকে।

হোটেল

  • মারমেইড বিচ রিসোর্ট

  • সায়মন বিচ রিসোর্ট

  • প্যারাডাইজ

  • বীচ ভিউ

  • কোরাল রীফ

  • ভিউইকরা

  • হানিমুন রিসোর্ট

ভিডিও

খরচ পর্যালোচনা

যাতায়াত খরচ- বাস যাত্রা করলে যাওয়া এবং আশা খরচ হতে পারে আনুমানিক 3000 থেকে 4000 হাজার টাকা পর্যন্ত।

হোটেল খরচ- প্রতি দিনের জন্য 1500 থেকে 3000 টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

খাবার খরচ-  প্রতিদিন খাবার খরচ 400 থেকে 500 টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

এখানে যে কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে তার থেকে আপনার খরচ কম বা বেশি হতে পারে।

 

টিপস এন্ড ট্রিকস

1. মহেশখালী ভ্রমণ করলে অবশ্যই এখানকার পান খেয়ে নেবে

2. কক্সবাজার ভ্রমণ করলে অবশ্যই কক্সবাজারের সৌন্দর্যটা উপভোগ করে আসবেন।

3. দলগত ভাবে এমন করলে খরচ কম হয়। সুবিধা পাওয়া যায় অনেক।

মহেশখালী ভ্রমণ করলে অবশ্যই তার আশেপাশের পর্যটন কেন্দ্র গুলো জেনে যাওয়া ভালো। আর এসব পর্যটন কেন্দ্রের জানতে আমাদের ওয়েবসাইট দেখুন।

উপরের তথ্য সম্পর্কে মতামত দিন, কোন তথ্য ভুল থাকলে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য অগ্রিম ধন্যবাদ।
Language